মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর তেজগাঁও থেকে এলএসডি, ডিএমটি ও আমেরিকান ক্যানাবিজ মাদকসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল শনিবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার (২৭ জুন) প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নের খন্দকার সাইফুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন লাভ রোড এলাকা থেকে সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাদাব (২৯), আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের (২৫), স্বপ্নীল হোসেন (২২) এবং সিমিয়ন খন্দকার (২৩) নামের মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। তল্লাশী করে তাদের কাছ থেকে বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক (এলএসডি)- ৪০ ব্লট, নতুন মাদক (ডিএমটি)- ৬০০ মিলিগ্রাম , আমেরিকান ক্যানাবিজ ৬২ গ্রাম এবং মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
এলএসডি সম্বন্ধে ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি। এটি মূলত বিদেশ থেকে পোষ্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হয় এবং উচ্চমূল্য হওয়ায় মূলত এর ব্যবহারকারী উচ্চবিত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
অপরদিকে গত রাতের অভিযানে উদ্ধারকৃত নতুন ধরনের একটি মাদক যার নাম ডিএমটি, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম Dimethyl Tryptamine এটি একটি হ্যালুসিনোজেনিক ট্রিপটামাইন ড্রাগ। মূলত এটি মূখে এলএসডি সেবনের মত, যা ধোঁয়ার মাধ্যমে শ্বাস নিয়ে বা ইনজেকশনের সাথে নেওয়া যায়। এটি সেবনের পরে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট গভীর আসক্তি তৈরী করে।
গ্রেপ্তাররকৃতদের ভাষ্যমতে এটি সেবনের পর তড়িৎ হ্যালুসিনেশন হয় এবং তারা কল্পনার জগতে প্রবেশ করে। মূলত এ থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা হতে পারে এমনকি জীবননাশও হতে পারে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ২ জন বিদেশে পড়ালেখা করার জন্য গিয়েছিলো। তারমধ্যে ১ জন থাইল্যান্ডে এবং অন্যজন যুক্তরাজ্যে এলসডি এবং ডিএমটি মাদক নিয়মিত গ্রহন করত।
গ্রেপ্তারকৃত সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাদাব(২৯) রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল শেষ করার পর ভারতের দার্জিলিংয়ে ২০১৩ সালে ‘এ’ লেভেল পড়াশোনা করে। এরপর সে ২০১৫ সালে বিবিএ পড়ার জন্য থাইল্যান্ডে গমন করে। ১ বছর সে থাইল্যান্ডে বিবিএ পড়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণে আসক্ত হয়ে পরে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসেও উক্ত মাদক গ্রহণ অব্যহত রাখে। সে মূলতঃ এই ড্রাগ বিদেশ থেকে বিভিন্ন পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশে এনে নিজে গ্রহণ ও বিক্রি করে।
অপর দিকে মোঃ আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের (২৫) রাজধানীর এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল শেষ করে মালেয়েশিয়া গমন করে এবং ২০১৫-২০১৬ সাল পর্যন্ত পড়ালেখার জন্য অবস্থান করে। পরবর্তীতে সে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে গমন করে এবং সেখানে সে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণ করত। সেখান থেকে এমবিএ শেষ করে ২০২০ সালে বাংলাদেশে ফেরত আসে এবং বাংলাদেশে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণ ও বিক্রি করে। এছাড়া, স্বপ্নীল হোসেন (২২) এবং সিমিয়ন খন্দকার (২৩) ২ জনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত রয়েছে।